মি. রায়হান রসায়ন শাস্ত্রে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে চাকরি করেননি । প্রথমে কয়েকজন কর্মী সাথে নিয়ে তিনি একটা ছোট কসমেটিক্স সামগ্রী তৈরির কারখানা গড়ে তোলেন। প্রথমে নিজেই কর্মীদের কাজ দেখেছেন । উৎপাদিত পণ্য দোকানে ঘুরে ঘুরে বিক্রয় করেছেন। তার উৎপাদিত পণ্যের মান ও এর সুগন্ধ দ্রুতই ক্রেতাদের নজর কাড়ায় তার ব্যবসায় দ্রুত বাড়তে থাকে । এক পর্যায়ে উৎপাদনের কাজ দেখার জন্য তিনি একজন জুনিয়র কেমিস্ট নিয়োগ করেন। বিক্রয় দেখার জন্য বিবিএ পাস করা একজন গ্রাজুয়েটকে দায়িত্ব দেয়া হয় । পরে উৎপাদিত পণ্যের মান নিশ্চিত করার জন্য কোয়ালিটি কন্ট্রোল অফিসার এবং বিক্রয় কার্য সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে মার্কেটিং বিভাগ খুলে তার অধীনে সেলস প্রমোশন অফিসার নিয়োগ করেন । এখন তার কারখানা অনেক বড় হয়েছে । নতুন নতুন আধুনিক যন্ত্র বসেছে। সারা দেশে পরিবেশক নিয়োগ দিয়েছেন । প্রশাসনিক বিভাগ, মানবসম্পদ বিভাগ, ক্রয় বিভাগ, অর্থ বিভাগ ইত্যাদি খুলে বিভিন্ন যোগ্য ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে । এখন তিনি প্রতিষ্ঠানের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (CEO) । এভাবে তার প্রতিষ্ঠানে ওপর থেকে নীচ পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে ধাপে ব্যবস্থাপক ও কর্মী মিলে একটা শক্তিশালী ও দৃশ্যমান সম্পর্কের রূপরেখা গড়ে উঠেছে । যেই সম্পর্কের মূলকেন্দ্রে আছেন তিনি। আর তা ধীরে ধীরে বিভিন্ন বিভাগ ও উপবিভাগে ভাগ হয়ে নিচের দিকে বিস্তৃত হয়েছে । মি. রায়হান ভাবেন, একটা বিল্ডিং যেভাবে ধীরে ধীরে নির্মিত হয়ে একটা বৃহৎ অবকাঠামোতে রূপ নেয় আজ তার শিল্পও ধীরে ধীরে এ ধরনের একটা কাঠামোর রূপ নিয়েছে । প্রথমে তিনি স্বল্প সংখ্যক কর্মী নিয়ে যেই প্রতিষ্ঠান গড়েছিলেন সেখানেও একটা কাঠামো ছিল । কিন্তু আজ তা সত্যিই দৃশ্যমান । মি. রায়হানের প্রতিষ্ঠানে যে সম্পর্কের কাঠামো আমরা অনুমান করতে পারি তাকেই সংগঠন কাঠামো বলে । যদি তা একটা চিত্রে তুলে ধরা হয় তবে তাকে সংগঠন কাঠামো চিত্র (Organogram) বলা হয়ে থাকে ।
সংগঠন কাঠামো হলো প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত বিভিন্ন বিভাগ, উপবিভাগ ও কর্মীবৃন্দের পারস্পরিক সম্পর্কের একটি কাঠামো চিত্র । সংগঠন কাঠামোকে যখন একটি চিত্রে উপস্থাপন করা হয় তখন ঐ চিত্রকে সংগঠন চার্ট নামে অভিহিত করা হয়। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্তর, বিভাগ, উপবিভাগ এবং ক্ষমতা প্রবাহের চিত্র প্রদর্শিত হয় ।
সংগঠন কাঠামোর আয়তন-এর কাজ ও কর্মীর সংখ্যা এবং এর স্তর বিন্যাসের ওপর নির্ভরশীল । স্তর বিন্যাস যত বৃদ্ধি পায় সংগঠন কাঠামোর আয়তনও ততো বাড়ে। সংগঠন চিত্র ততোই ওপরের একক কেন্দ্র হতে নিচের দিকে বিস্তৃতি লাভ করে । ফলে এটি অনেকটা পিরামিডের আকৃতি পায় । নিম্নে একটা সংগঠন কাঠামো চিত্র তুলে ধরা হলো:
আরও দেখুন...